ওমরাহ পালনের সুবিধাজনক সময়
পবিত্র মক্কায় গিয়ে ওমরাহ পালন করা, বিশ্বের লাখ লাখ মুসলিমের সারা জীবনের লালিত স্বপ্ন। অর্থনৈতিক সামর্থ্য আছে এমন মুসলিমরা আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য এ ইবাদত করে থাকেন। বছরের যে কোনো সময় উমরাহ করা যেতে পারে। তবে রমজান মাসে এ আমলের গুরুত্বই আলাদা। রমাদান ছাড়াও আবহাওয়া বিবেচনায় ওমরা পালনের জন্য বছরে আরও কিছু সুবিধাজনক সময় আছে, আজকের ব্লগে এ বিষয়গুলোই তুলে ধরা হল।
ওমরাহ কী?
উমরাহর অর্থ হল ইচ্ছা ও ভ্রমণ। কাবা শরীফে গিয়ে তাওয়াফ ও সাঈর মত কিছু নির্দিষ্ট কাজ করাকে উমরা বলা হয়।
ওমরাহর শুরু হল যেভাবে
কাবাগৃহ নির্মাণের পর মহান আল্লাহর নির্দেশে হযরত ইবরাহিম ও ইসমাঈল (আ.) হজ ও ওমরা পালনের নিয়ম চালু করেন।
কেন ওমরাহ পালন করতে হয়
পবিত্র কুরআনে আল্লাহতায়ালা বলেন-
وَأَتِمُّوا الْحَجَّ وَالْعُمْرَةَ لِلَّهِ আর তোমরা আল্লাহর উদ্দেশ্যে হজ্জ্ব ওমরাহ পরিপূর্ণ ভাবে পালন কর। (সূরা বাকারা: ১৯৬)
হাদিসে বর্ণিত আছে-
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ الْعُمْرَةُ إِلَى الْعُمْرَةِ كَفَّارَةٌ لِمَا بَيْنَهُمَا وَالْحَجُّ الْمَبْرُورُ لَيْسَ لَهُ جَزَاءٌ إِلاَّ الْجَنَّةُ আবূ হুরাইরাহ্ (রা.) থেকে বর্ণিত যে, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- এক ‘উমরাহ’র পর আর এক ‘উমরাহ উভয়ের মধ্যবর্তী সময়ের (গুনাহের) জন্য কাফফারা। আর জান্নাতই হলো হাজ্জে মাবরূরের প্রতিদান। (সহীহ বুখারি: ১৭৭৩)
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " تَابِعُوا بَيْنَ الْحَجِّ وَالْعُمْرَةِ فَإِنَّهُمَا يَنْفِيَانِ الْفَقْرَ وَالذُّنُوبَ كَمَا يَنْفِي الْكِيرُ خَبَثَ الْحَدِيدِ وَالذَّهَبِ وَالْفِضَّةِ وَلَيْسَ لِلْحَجَّةِ الْمَبْرُورَةِ ثَوَابٌ إِلاَّ الْجَنَّةُ " আবদুল্লাহ বিন মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমরা ধারাবাহিক হজ্জ ও উমরা আদায় করতে থাক। এ দুটো আমল দারিদ্র ও গুনাহ বিদূরিত করে দেয়। যেমন ভাটার আগুনে লোহা ও সোনা-রূপার ময়লা-জং দূরিভূত হয়ে থাকে। একটি কবুল হজ্জের প্রতিদান তো জান্নাত ছাড়া আর কিছুই নয়। (সুনান আত তিরমিযী:৮০৮)
কয়বার ওমরাহ করেছেন রাসূল (সা.)? حَدَّثَنَا قَتَادَةُ، قَالَ قُلْتُ لأَنَسِ بْنِ مَالِكٍ كَمْ حَجَّ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم قَالَ حَجَّةٌ وَاحِدَةٌ وَاعْتَمَرَ أَرْبَعَ عُمَرٍ عُمْرَةٌ فِي ذِي الْقَعْدَةِ وَعُمْرَةُ الْحُدَيْبِيَةِ وَعُمْرَةٌ مَعَ حَجَّتِهِ وَعُمْرَةُ الْجِعِرَّانَةِ إِذْ قَسَّمَ غَنِيمَةَ حُنَيْنٍ . কাতাদা (রহ.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) কে বললাম, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কয়বার হজ্জ করেছেন? তিনি বললেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার হজ্জ এবং চারবার উমরা করেছেন। যিলকাদ মাসে একটি উমরা, হুদায়বিয়ার উমরা, হজ্জের সঙ্গে একটি এবং জি’ইররানার থেকে একটি, সে সময় তিনি হুনায়ন যুদ্ধে লব্ধ গনীমত বন্টন করেছিলেন। (সুনান আত তিরমিযী: ৮১৪)
রাসূল (সা.) এর প্রথম ওমরাহ
হিজরতের ষষ্ঠ বছর নবী (সা.) স্বপ্নে দেখেন, তিনি সাহাবাদের নিয়ে ইহরাম বেঁধে উমরাহর জন্য মক্কা মুকাররমায় প্রবেশ করছেন। নবীদের স্বপ্ন সত্য। তাই স্বপ্নের কথা শুনে সাহাবায়ে কেরাম (রা.) ওমরাহর জন্য উদগ্রীব হয়ে ওঠেন। সাহাবিদের উৎসাহ-উদ্দীপনা রসূলুল্লাহ (সা.) কে ওমরার করার জন্য আরও বেশি আগ্রহী করে তোলে। ফলে তিনি ৪০০ সাহাবাকে সঙ্গে নিয়ে জিলকদ মাসে উমরার উদ্দেশ্যে বের হন এবং হুদাইবিয়া নামক স্থানে অবস্থান গ্রহণ করেন।
মক্কার মুশরিকরা মুসলিম কাফেলাকে প্রতিহত করার ঘোষণা দেয়। রাসূল (সা.) কোনো সংঘাত চাননি। তাই হুদাইবয়িায় মুশরিকদের সাথে চুক্তি করেন তিনি। এ চুক্তিতে বলা হয়- এ বছর মুসলিমরা ফিরে যাবে এবং আগামী বছর তিনি দিনের জন্য মক্কায় প্রবেশের অনুমতি পাবে। ফলে রাসূল (সা.) এবং সাহাবা (রা.) হুদাইবিয়ায় ইহরাম ত্যাগ করেন। এটাই ছিল নাবী (সা.) এর প্রথম উমরাহ্।
ওমরাহর হুকুম
عَنْ جَابِرٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم سُئِلَ عَنِ الْعُمْرَةِ أَوَاجِبَةٌ هِيَ قَالَ " لاَ وَأَنْ تَعْتَمِرُوا هُوَ أَفْضَلُ " জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম- কে উমরা সর্ম্পকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে, এটা কি ওয়াজিব? তিনি বললেন, না তবে উমরা করবে। তা হলো উত্তম। (সুনান আত তিরমিযী: ৯৩৩)
এ হাদিসের মাধ্যমে বুঝা যায়, যাদের অর্থনৈতিক সামর্থ্য আছে তাদের জন্য উমরা করা উত্তম।
ওমরাহ পালনের সুবিধাজনক সময়
সার্বিক বিবেচনায় ওমরাহ পালনের সুবিধাজনক সময় হল-
আবহাওয়া বিবেচনায়: মে থেকে সেপ্টেম্বর এ মাসগুলোতে তীব্র গরম থাকে সৌদি আরবে। তাপমাত্রা থাকে ৩৮ থেকে ৫৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের হাজি সাহেবদের জন্য এ গরম সহ্য করা কঠিন হয়ে যায়।
নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি এ সময় সৌদি আরবের আবহাওয়া থাকে শীতল। আবহাওয়া বিবেচনায় এ মাসগুলোকে ওমরাহ পালনের সুবিধাজনক সময় বিবেচনা করা হয়। হাজি সাহেবদের এ মাসগুলোতে উমরা করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
নিরিবিলি পরিবেশে উমরাহ্: অনেকেই চান ভিড় এড়িয়ে নিরিবিলি পরিবেশে উমরাহ করবেন। তাদের জন্য পরামর্শ হল, পিক-সিজন অর্থাৎ নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি এবং রমজান মাস ছাড়া অন্য সময়ে ওমরায় যাবেন। রমাদ্বান ও শীতকালে মক্কা মুকাররমায় প্রচন্ড ভিড়। এজন্য এ সময়ে নিরিবিলি উমরা পালন করা কঠিন হয়ে যায়।
কম খরচে ওমরাহ: আল্লাহর ঘর দর্শন করার স্বপ্ন সব মুসলিমের মনেই রয়েছে। কিন্তু অর্থনৈতিক কারণে অনেকের স্বপ্ন অধরাই রয়ে যায়। শীতকালে সৌদি আরবে সবকিছুর দাম অনেক বেশি থাকে। রমযানে জিনিসপত্রের দাম খুব বেশি না বাড়লেও, হোটেল ভাড়া এবং ট্রান্সপোর্ট খরচ অনেক বেড়ে যায়। যারা অর্থনৈতিক বিষয়টা বিবেচনা করেন, তাদের জন্য এ মাসগুলো ওমরাহ পালনের সুবিধাজনক সময় নয়। কম খরচে উমরাহ্ করতে হাজি সাহেবদের উচিৎ পিক-সিজন এড়িয়ে চলা।
সেরা সময়
قَالَ " فَإِذَا كَانَ رَمَضَانُ اعْتَمِرِي فِيهِ فَإِنَّ عُمْرَةً فِي رَمَضَانَ حَجَّةٌ " নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আচ্ছা, রমযান এলে তখন ’ওমরাহ পালন করো। কেননা, রমযানের একটি ’উমরা একটি হাজ্জের সমতুল্য। (সহীহ বুখারি: ১৬৬৭)
ওমরাহ পালনে যেসব কাজ করতে হয়
- নিয়ত
- ইহরাম পরিধান
- তাওয়াফ
- সাঈ
- চুল ছোট করা বা মাথা মুন্ডন
বাংলাদেশ থেকে ওমরাহ পালন
বাংলাদেশে অনেক হজ্জ অ্যাজেন্সি আছে, যারা ওমরাহ পালনে আগ্রহী মুসল্লিদের সব রকম সেবা দিয়ে থাকেন। এ অ্যাজেন্সিগুলোর মধ্যে ‘হিজাজ হজ ও উমরাহ কাফেলা’ উল্লেখযোগ্য। এ এজেন্সি যেসব সেবা দিয়ে থাকে-
সারসংক্ষেপ
আমরা আল্লাহর কাছে দোয়া করব, যেন তিনি আমাদের মৃত্যুর আগে একবার হলেও ওমরাহ পালন করার সৌভাগ্য দান করেন। কবে উমরায় যাওয়া যায়, পরিকল্পনা করব এবং পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় অর্থ সেভিংস করার চেষ্টা করব। আল্লাহ আমাদের সবাইকে তার ঘর দর্শনের সৌভাগ্য নসীব করুন।
Hijaz Service Area
Find your nearby Hajj & Umrah agency associated with Hijaz Hajj & Umrah Kafela Bangladesh. Identify the trusted Umrah agents in your area and get in touch with them to facilitate your next holy journey to Makkah and Madina.
- Bagerhat
- Bandarban
- Barguna
- Barisal
- Bhola
- Bogra
- Brahmanbaria
- Chandpur
- Chittagong
- Chuadanga
- Cox's Bazar
- Cumilla
- Dhaka
- Dinajpur
- Faridpur
- Feni
- Gaibandha
- Gazipur
- Gopalganj
- Habiganj
- Jamalpur
- Jessore
- Jhalokati
- Jhenaidah
- Joypurhat
- Khagrachari
- Khulna
- Kishoreganj
- Kurigram
- Kushtia
- Lakshmipur
- Lalmonirhat
- Madaripur
- Magura
- Manikganj
- Maulvibazar
- Meherpur
- Munshiganj
- Mymensingh
- Naogaon
- Narail
- Narayanganj
- Narsingdi
- Natore
- Nawabganj
- Netrokona
- Nilphamari
- Noakhali
- Pabna
- Panchagarh
- Patuakhali
- Pirojpur
- Rajbari
- Rajshahi
- Rangamati
- Rangpur
- Satkhira
- Savar
- Shariatpur
- Sherpur
- Sirajgonj
- Sunamganj
- Sylhet
- Tangail
- Thakurgaon